১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানুন
সম্মানিত পাঠক, আসসালামু আলাইকুম আশা করছি আল্লাহর রহমতে আপনারা সকলেই ভালোই
আছেন। আজকের আর্টিকেলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টপিকে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে ১০
হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে। আপনাকে নতুন ব্যবসা শুরু করতে হলে
প্রথমে অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে বের করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি
অল্প পুজিতে অনেক বেশি ব্যবসার আইডিয়ার মাঝে হাবুডুবু খাচ্ছেন বা ভেবে পাচ্ছেন না
যে কোন ব্যবসাটি বেছে নিবেন?
তাহলে আপনি এখন সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। কেননা আজকের আর্টিকেলে মূলত আপনার এই
হিমশিম খাওয়ার বিষয় চিন্তা করেই ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা সাজানোর চেষ্টা করেছি। যেগুলো জেনে আপনি আপনার
সুবিধা মত বা দক্ষতা অনুযায়ী লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এ বিষয়ে
বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে কিছুক্ষণ সময় অপচয় করে আমাদের সাথে শেষ অবদি
থাকতে হবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃভূমিকা
১০ হাজার টাকায় ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আপনি সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে অনেক আইডিয়া
পেয়ে পারেন। এছাড়া আপনার পরিচিত কারও কাছে জানতে চাইলে তারাও আপনাকে বিভিন্ন
ব্যবসার আইডিয়া দিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু মূল বিষয় হল প্রতিটা ব্যবসার
ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ব্যাপার রয়েছে।
আপনার যদি বাজেট কম থাকে অর্থাৎ ১০ হাজার টাকার মধ্যে বাজেট হয়, তাহলে আপনাকে
প্রথমে চিন্তা করতে হবে যে আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও লাভজনক ব্যবসা কোনটি
হবে, সেটি নির্ধারণ করে ব্যবসার কাজ শুরু করা। এবং আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয়
হচ্ছে এই ১০ হাজার টাকার ব্যবসায় সফল ও লাভজনক হতে হলে আপনার নিজের পরিকল্পনা
ও শ্রম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তাহলে আসুন আর অতিরিক্ত কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক। আমরা প্রথমে
১০ হাজার টাকায় ব্যবসা করলে কি আসলেই লাভজনক হওয়া যায় কিনা সেই বিষয়ে জেনে
নেব।
১০ হাজার টাকায় ব্যবসা করলে কি লাভজনক হওয়া যাবে?
আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা একটি কমন প্রশ্ন করেন, সেটি হচ্ছে ১০
হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করে কি আসলেই লাভজনক হওয়া সম্ভব? এই প্রশ্নটা মনে
আশাটা স্বাভাবিক তার কারণ হচ্ছে প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম যেভাবে হু হু করে
বাড়ছে সেখানে এই সামান্য অর্থ দিয়ে কিভাবে ব্যবসা করা যায়!
মূলত বাস্তবতা হচ্ছে ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা নির্ধারণ করে
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিশ্রম করার মানসিকতা আপনার থাকে তাহলে আপনি ১০ হাজার
টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। শুধু তাই নয় আপনার দক্ষ পরিচালনায় এই
ব্যবসা একসময় এমন-ও হতে পারে ব্যবসাটি অনেক লাভজনক হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য
মানুষের কর্মসংস্থানের উৎস হয়ে উঠেছে।
আমাদের বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মে প্রায় অধিকাংশ মানুষই নিজেকে উদ্যোক্তা
হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তবে একটা বিষয় খুবই স্বাভাবিক যে আর্থিক দুর্বলতা থেকে
একটি ব্যবসা গড়ে তোলা বেশ কঠিন কাজ। যেখানে এখন প্রতিটা ব্যবসায়
প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে সেখানে এই মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করার
চিন্তা করাটা বেশ সাহসের বিষয়।
আবার অনেকেই আছেন যারা ভাবেন ব্যবসা করতে তো অনেক টাকা-পয়সার প্রয়োজন হয়।
কথাটা সত্য যে ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই মূলধনের প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু আপনি
চাইলে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী ১০ হাজার টাকার মধ্যেই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
নিম্নের তালিকায় আমরা বেশ কয়েকটি ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করেছি সেগুলো থেকে
আপনি যে কোন একটি বাছাই করে আপনার সুবিধামতো ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। তবে
এক্ষেত্রে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে যে আপনার কোন ব্যবসা সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা
রয়েছে এবং সেটা নিয়ে আপনি আত্মবিশ্বাসী। যথেষ্ট পরিমাণে আত্মবিশ্বাসী না হলে
সেই ব্যবসা শুরু করা বোকামি হবে। নিম্নে ১০ হাজার টাকায় শুরু করে যাবে এমন
বাছাইকৃত ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হলো-
অনলাইন গিফট শপ: অনলাইন গিফট শপ ২৫টি ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে শীর্ষ
স্থানে রয়েছে। কারণ হচ্ছে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত অনলাইন শপিং এর চাহিদা
প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। সেই সাথে আমরা প্রায়ই বন্ধু বা প্রিয়জনদের বিশেষ
দিনে গিফট দিয়ে থাকে যেটা আজকের সময়ে খুবই প্রচলিত একটি ব্যাপার।
গিফট আইটেম হিসেবে যেমন কৃত্রিম ফুল, শোপিস, চকলেট বিভিন্ন কাস্টমার উপহার
ইত্যাদি খুবই জনপ্রিয়। এই ব্যবসাটি আপনি মাত্র দশ হাজার টাকার মধ্যেই শুরু
করতে পারবেন শুধু প্রয়োজন পড়বে প্রথমত আপনাকে একটি ফেসবুক পেজ খুলে সেটার
মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে
পারলে সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
মোবাইল রিচার্জ এর দোকান: বর্তমানে
বাংলাদেশে মোবাইল রিচার্জ করা অথবা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন
করার ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ চাহিদায় রূপান্তরিত হয়েছে। এই ব্যবসার
ক্ষেত্রে আপনার বড় কোন দোকানের প্রয়োজন পড়বে না। আপনি চাইলে একটি ছোট্ট
টেবিল নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন।
যদিও এই ব্যবসায়ী লাভের পরিমাণ কম তারপরও এ ব্যবসাটি আপনি সারা জীবন করে যেতে
পারবেন। আপনি যদি একটি চেয়ার টেবিল নিয়ে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে
ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন তাহলে বেশ ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তবে
উল্লেখ্য বিষয় হচ্ছে এই ব্যবসার প্রাথমিক মূলধন ও পরিচালনা কম হওয়ার কারণে
লসের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
ফুচকার ব্যবসা: কোন কাজই ছোট নয় এবং কোন কাজে লজ্জার কিছু নাই। আমাদের
দেশে প্রায় সকল মহিলারাই ফুচকা খেতে খুবই পছন্দ করে। ফুচকার চাহিদা কখনোই শেষ
হবে না। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এই ব্যবসায় লোকসান হওয়ার প্রবণতা খুবই
কম।
আপনি যদি সঠিকভাবে পর্যালোচনা করে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ফুচকার ব্যবসা শুরু করতে
পারেন তাহলে সে জায়গায় আপনি প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম
করতে পারবে তার বেশিও হতে পারে।
হোমমেড ফুড ডেলিভারি: আপনি যদি রান্নায় বেশ দক্ষ কিংবা বিভিন্ন ধরনের
রেসিপির রান্নায় পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে খুব সহজেই নিজের দক্ষ প্যাশনকে কাজে
লাগিয়ে ব্যবসা করার মাধ্যমে পরিণত করতে পারেন। আর বর্তমানে হোমমেড খাবারের
চাহিদা ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় শহরাঞ্চলে চাকরিজীবী মহিলারা নিজেদের জন্যেও হোমমেড
খাবার অর্ডার করে থাকেন। তাই আপনি চাইলে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই এই ব্যবসাটি
শুরু করে দিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে ডেলিভারি সার্ভিস সহায়তা প্রয়োজন পড়বে।
কোচিং সার্ভিস ব্যবসা: আপনার বাড়িতে যদি একটি রুম খালি পড়ে থাকে তাহলে
সেই রুমে পড়া শোনার জন্য কোচিং সার্ভিস শুরু করতে পারেন। আপনার দক্ষ সাবজেক্ট
অনুযায়ী পড়ানোর জন্য আপনার সুবিধা মত শিক্ষার্থীর খোঁজ করুন। এরপর মাত্র ১০
হাজার টাকা খরচেই টিউশন বিজ্ঞাপন, কিছু বই পত্র, টেবিল-চেয়ার, হোয়াইট বোর্ড
ক্রয় করে শুরু করা সম্ভব।
সেলাইয়ের ব্যবসা: সেলাইয়ের ব্যবসা মূলত মেয়েদের জন্য একটি লাভজনক ব্যবসা
হতে পারে। যদিও ছেলেরাও এটাতে বেশ দক্ষ হয়ে থাকে। আপনি যদি এ কাজে আগ্রহ ও
দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে এই ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে ১০ হাজার
টাকার মধ্যে সেলাই মেশিন, সুতা ও অন্যান্য সেলাইয়ের সামগ্রী গুলো ক্রয় করে শুরু
করে দিতে পারবেন।
তবে এজন্য বেশি প্রয়োজন পড়বে সবার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রাখা অথবা আপনি
চাইলে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে প্রচার করতে পারেন। বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ
মহিলারা সংসারের পাশাপাশি সেলাইয়ের ব্যবসাকে বেছে নিচ্ছে।
অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা: বর্তমানে অনলাইনে বা অফলাইনে অনেকেই কাপড় এর
ব্যবসা শুরু করছেন। এক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু পাইকারি মার্কেট গুলোতে থেকে ভাল
মানের কাপড় গুলো ক্রয় করে এনে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে সেই
পন্যগুলোর প্রচারণা করে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। প্রথমদিকে ১০ হাজার টাকা
দিয়েই এই ব্যবসা শুরু করা যাবে পরবর্তীতে চাহিদা অনুযায়ী আপনাকে মেইনটেইন করতে
হবে।
হস্তশিল্পের ব্যবসা: যারা ক্রাফট এর কাজে বেশ দক্ষ রয়েছে তারা চাইলে
অল্প খরচেই কাঁচামাল ক্রয় করে বিভিন্ন হস্তশিল্পের জিনিস সামগ্রী তৈরি করে
অফলাইন বা অনলাইনে দুটি মাধ্যমেই বিক্রি করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার
ফেসবুক পেজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা থাকতে হবে। এছাড়াও আপনি এ কাজে যদি
পারদর্শী না হলে, যারা এই কাজে পারদর্শী অল্প পুজি দিয়ে তাদের সাথে যৌথভাবে
ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
বাসায় ফুড স্টল: রান্নার কাজে বেশ পারদর্শী হলে ফুড স্টল এর ব্যবসা শুরু
করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রথম দিকে বেশি মূলধনের প্রয়োজন পড়বে না। আপনার এলাকা
ভিত্তিকভাবে বিভিন্ন স্যুপ আইটেম, হালিম আইটেম ইত্যাদি দিয়ে শুরু করতে পারেন।
এতে আপনি আপনার বাসার আশেপাশে থেকেই বেশ ভালো অর্ডার পেয়ে যাবেন। তবে আপনি যদি
কোন বাজারে একটি ফুড স্টল দিয়ে ব্যবসা করতে পারেন তাহলে বেশি লাভজন হতে পারবেন।
কারণ বাজারে গ্রাহক সংখ্যা বেশি যার ফলে বেচা বিক্রিও বেশি হবে।
ফোন মেরামতের ব্যবসা: বর্তমানে প্রায় সবাই
মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন। তাই সকলেরই ফোন নষ্ট হয়ে গেলে মেরামত করার
প্রয়োজন পড়ে। আপনি চাইলে মাত্র ১০ হাজার টাকায় এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
মোবাইল ফোন মেরামতের জন্য জরুরিভাবে প্রয়োজনীয় যেগুলো জিনিসপত্র লাগবে সেগুলো
১০ হাজার টাকার মধ্যেই কেনা হয়ে যাবে। এটি আপনার জন্য অল্প সময়ে লাভজনক ব্যবসা
হতে পারে।
ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা: আপনি চাইলে অল্প পুজিতে ট্রাভেল এজেন্সির
ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এখন মানুষের হাতে সময় কম যা ফলে ব্যস্ত জীবনে সময়
বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাই কোথাও ঘুরতে বা কোন কাজে যাওয়ার চিন্তা করলে বিভিন্ন
পরিবহনের টিকেট থেকে শুরু করে হোটেল বুকিং পর্যন্ত তারা ট্রাভেল এজেন্সির কাছে
ধরণা নিয়ে থাকে। তাই এটি আপনার সাইড ব্যবসা হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন।
ফুডভ্যান এর ব্যবসা: বিকালের দিকে বিভিন্ন রাস্তায় স্ট্রিট ফুড
ভ্যানগুলোতে প্রচূর ভীড় জমতে দেখা যায়। যেমন ফুচকা, স্যুপ, চিকেন মোমো, চটপটি,
নুডলস, কাবাব, ঝালমুড়ি, বার্গার ইত্যাদি। আপনি যদি অল্প দামে খাবারের মান ভালো
করতে পারেন তাহলে আপনার গ্রাহকের অভাব হবে না। আর অল্প দামে ভাল মানের খাবার
সকলেই পছন্দ করেন। তাই আপনি চাইলে ১০ হাজার টাকার মধ্যে এই ব্যবসাটি শুরু করতে
পারেন।
কাঁসা ও পিতলের ব্যবসা: আমাদের দেশে বর্তমানে কাঁসা এবং পিতল সহ বিভিন্ন
আসবাবপত্রের চাহিদা দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ব্যবসাটি করতে হলে
প্রথমদিকে ছোট আকারে শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি
লাভজনক ব্যবসার মধ্যে এই ব্যবসাটি যোগ করতে পারেন।
কাগজের ঠোঙার ব্যবসা: দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন জিনিসপত্র বহনের জন্য
দোকানিরা কাগজের ঠোঙ্গাতে সেগুলো জিনিস দেয়। যার ফলে দেখা যায় কাগজের ঠোঙ্গা
চাহিদা মার্কেটে বিশাল আকার ধারণ করেছে। আপনি যদি কাগজের ঠোঙ্গা বানিয়ে বিক্রি
করার ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে খুব সহজেই আপনার ব্যবসাটি দাড় করে ফেলতে পারবেন।
এক্ষেত্রে কাটিং মেশিন, কাগজ এবং আঠা হলেই ঘরে বসে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
ড্রপশিপিং ব্যবসা: ড্রপশিপিং সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন আবার অনেকেই
জানেন না। যারা এই সম্পর্কে জানেন তারা হয়তো নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কি বিষয়ে
ব্যবসা করার কথা বলতে চাচ্ছি। ড্রপশিপিং ব্যবসায় অনেক বেশি মূলধনের প্রয়োজন
পড়ে না।
অন্য কারও পণ্য তাদের ওয়েবসাইট থেকে কিংবা যেকোন ই-কমার্স সাইট যেমন(আলিবাবা,
এমাজন ইত্যাদি) আপনার গ্রাহকদের অর্ডার অনুযায়ী সেল করতে পারবেন। ড্রপশিপিং এর
ব্যবসা সম্পর্কে ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও রয়েছে আপনারা চাইলে সেখান থেকেও
ব্যবসার টিউটোরিয়াল দেখে নিতে পারেন।
নকশীকাঁথা বা তাঁতের শাড়ির ব্যবসা: আমাদের দেশীয় পন্যের কদর সবার কাছেই
সবসময় বেশি থাকে। বিভিন্ন দেশীয় পন্য যেমন, তাঁতের শাড়ি, পাটি, পাপোশ,
নকশীকাঁথা, বাঁশের বা পাতার তৈরি ঝুড়ি ইত্যাদি বানানোতে আপনি যদি পারদর্শী হয়ে
থাকেন অথবা উৎপাদনকারী কারখানা থেকেও পাইকারি দামে কিনে সেগুলো অনলাইনে বা
অফলাইনে বিক্রি করতে পারবেন।
অনলাইন বই বিক্রির ব্যবসা: অনলাইনে বিশেষ করে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে
পুরাতন বই অনেকেই বিক্রি করে থাকেন। তাই আপনি চাইলে এই ব্যবসাটি করতে পারেন।
বিভিন্ন গল্পের বই, পড়াশোনা ও চাকরি বিষয়ক বই ইত্যাদি। নতুন বই কেনার যাদের
সামর্থ্য নেই তারা অল্প দামে বই কিনতে চায়। তাই আপনি চাইলে অল্প মূলধন বিনিয়োগ
করে কিছু প্রয়োজনীয় বই কিনে ফেসবুকের মাধ্যমে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
অনলাইন ইন্টেরিয়র ডিজাইন: আপনি যদি একজন ইন্টেরিয়ার ডিজাইনার হয়ে
থাকেন তাহলে অনলাইন ইন্টেরিয়র ডিজাইন সেবা প্রদান করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি
ঘরে বসেই আপনার সুবিধামতো আপনার গ্রাহকের প্রাথমিক আবাসন প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী
ডিজাইন করে দিতে পারেন।
ফুলের বিপণি: ফুলের বিপণি একটি সাধারণ ব্যবসা কিন্তু এটি লাভজনক ব্যবসা।
আপনি বাড়ির ছাদে ফুল গাছ চাষ করে তা অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যমেই বিক্রি করতে
পারেন। এখন অনেকেরই ফুল গাছের বেশ শখ রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি ১০ হাজার টাকায় এই
ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
কাঁসা পিতলের ব্যবসা: কাঁসা এবং পিতলের ব্যবসাটি খুবই লাভজনক ব্যবসা হতে
পারে। এই ব্যবসা আপনি অনলাইনে বা অফলাইনে উভয় মাধ্যমে করতে পারেন। শুধু আপনাকে
ফেসবুক পেজ সম্পর্কে বেসিক ধারণা রাখতে হবে। তাহলে আপনি বিভিন্ন পাইকারি
কারখানা থেকে পাইকারি দামে এগুলো পণ্য কিনে বিক্রি করতে পারবেন।
বিউটিশিয়ান ব্যবসা: বর্তমানে একজন ভালো বিউটিশিয়ান এর চাহিদা দিন দিন
বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর আপনি যদি একজন বিউটিশিয়ান হয়ে থাকেন অথবা আপনার যদি সব
ধরণের কসমেটিক্স এর ব্যবহার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকে, তাহলে আপনি এই ব্যবসাটি
করতে পারেন।
তবে আপনি যদি এই ব্যবসায় আগ্রহী হয়ে থাকেন কিন্তু আপনার এ বিষয়ে কোন দক্ষতা
নেই। তাহলে ভালো মানের স্কিনের সমস্যার জন্য আপনাকে বিউটিশিয়ানদের পরামর্শ
নিতে হবে। এক্ষেত্রে মাত্র ১০ হাজার টাকার মধ্যে এই সম্ভাবনাময় ব্যবসা শুরু
করতে পারবেন।
ই-কমার্স দক্ষতা শেখানো: আপনি অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিপণি করতে
পারেন এবং অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে হোম-বেসড (Home Based) ই-কমার্স দক্ষতা
আগ্রহীদের শেখাতে পারেন। এটি সময়ের সাথে সাথে তাদের পন্যের বিক্রয় দিগুন
বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: যারা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে যারা অধিক আগ্রহী
তারা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখে সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারলে বেশ ভালো অর্থ
উপার্জন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে শুধু আপনার পছন্দের বা ভালো মানের আইটি
সেন্টার হতে ৫ হাজার টাকার মধ্যে কোর্স করতে হবে।
মেকআপ আর্টিস্ট: বর্তমানে কোথাও না কোথাও বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা প্রোগ্রামের জন্য
অনেকেই মেকআপ আর্টিস্ট হায়ার করে অল্প সময়ের মধ্যে তাদের মেকওভার নিয়ে করিয়ে
নিতে চায়। তাই আপনি যদি মেকাপের কাজে বেশ দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে মাত্র ১০
হাজার টাকাই মেক-আপের সকল জিনিসপত্র কিনে মেকাপ আর্টিস্ট হতে পারবেন।
সিজনাল ফলের ব্যবসা: পরিশেষে লাভজন ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে আপনি সিজনাল
ফলের ব্যবসাকে বেছে নিতে পারেন। এই সিজনালী ফলের ব্যবসায় অনেক লাভবান হওয়া যায়।
অল্প পুজিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই সিজনাল ফলের ব্যবসার কোন জুড়ি নেই। তাই
দেশি ফল পাইকারিভাবে সরবরাহ করতে পারলে বেশ ভাল লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
লেখকের শেষকথা
পরিশেষে বলব যে, ব্যবসা হচ্ছে এমন একটি বিষয় যেখানে লাভ-ক্ষতি দুটোই বিরাজ
থাকবে। তাই যদি কখনো লোকশানের কবলে পড়েন তাহলে পুনরায় লাভের উদ্দেশ্যে আরেকটু
মনোযোগ দিয়ে প্রতিটা পদক্ষেপ জোড়পূর্বক গ্রহণ করতে হবে। তাহলে আপনি একজন সফল
ব্যবসায়ী হতে পারবেন।
উপরোক্ত ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে আপনার দক্ষ বা বাজেট অনুযায়ী যেকোনো ব্যবসা
নির্ধারণ করে আজকে থেকেই ব্যবসার কাজে নেমে যেতে পারেন। শুধু মনের ইচ্ছা ও
আকাঙ্ক্ষা থাকাটা সবচেয়ে বড় বিষয়। আশা করছি এই ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া গুলো
জেনে আপনার উপকারে আসবে।
আমরা ইতিমধ্যে ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
আশা করছি আপনারা এ বিষয়ে অবগত হয়েছেন। নিজের ব্যবসার ক্ষেত্রে সকলেই সচেতন
থাকতে হবে। তাহলেই ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন।
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত
কিংবা কোন অংশ বুঝতে না পারেন তাহলে সেটা আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে।
লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের শেয়ার করতে
ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url