এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ কি
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আমাদের মাঝে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা
প্রতিনিয়ত পেটে জ্বালাপোড়া ও এসিডিটির সমস্যায় ভোগেন। আপনি তাদের মধ্যে
একজন হয়ে থাকেন, তাহলে আজকের পোষ্টটি আপনার জন্য। কারণ এই সমস্যা থেকে মুক্তি
দিতে পারে এন্টাসিড প্লাস ওষুধ। অনেকেই এই এন্টাসিড প্লাস সম্পর্কে গুগলের
কাছে জানতে চায়। এজন্য মূলত তাদের সুবিধার কথা ভেবেই আজকের আর্টিকেলে এন্টাসিড
প্লাস খাওয়ার নিয়ম ও এর কাজ সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
আপনি যদি পেটে জ্বালাপোড়া ও এসিডিটির সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য
এন্টাসিড প্লাস খেতে চান, তাহলে এই ওষুধ খাওয়ার আগে এন্টাসিড প্লাস এর কাজ
কি ও খাওয়ার নিয়ম সহ, এন্টাসিড প্লাস কখন খেতে হয়, এন্টাসিড প্লাস এর পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া ও দামসহ এই এন্টাসিড প্লাস সম্পর্কে আরও বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো জেনে নেওয়া জরুরি। আর এই এন্টাসিড প্লাস এর সকল তথ্য
বিস্তারিত জানতে হলে আমাদের সাথে শেষ অবদি থাকতে হবে। তাহলেই এই ওষুধ সম্পর্কে
অবগত হতে পারেবেন।
আর্টিকেল সূচিপত্রঃভূমিকা - antacid plus
বর্তমানে এসিডিটির সমস্যা জন্য এন্টাসিড প্লাস বহুল ব্যবহৃত একটি ওষুধ
হিসেবে পরিচিত। আমরা অনেকেই বিভিন্ন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় এই এন্টাসিড
প্লাস সেবন করিয়ে থাকি। তাই হয়তো এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট সম্পর্কে
কমবেশি সকলেই পরিচিত। এন্টাসিড প্লাস মূলত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস
লিমিটেড (Square Pharmaceuticals Ltd.) কোম্পানি বাজারজাত করে থাকে।
যার জেনেটিক নাম অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড ও
সিমেথিকোন। আপনারা অনেকেই এই এন্টাসিড প্লাস সম্পর্কে গুগলের কাছে জানতে চেয়ে
থাকেন। তাই আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাকে এই ওষুধ সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য
দেওয়ার চেষ্টা করব যেগুলো জেনে উপকৃত হতে পারবেন। পাশাপাশি অন্যকেও বিষয়ে
জানিয়ে সাহায্য করতে পারবেন।
এন্টাসিড প্লাস এর উপাদান
প্রতিটি ট্যাবলেটে রয়েছে-
শুকনো অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড জেল বিপি (Al2O3, ৪৭% সর্বনিম্ন): ৪২৫.৫৩
মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড বিপি: ৪০০ মিলিগ্রাম
সিমেথিকোন ইউএসপি: ৩০ মিলিগ্রাম
প্রতিটি ৫ মিলি তে থাকে-
অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড জেল ইউএসপির সমপরিমাণ):
২০০ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড (সমান পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড পেস্ট
ইউএসপি): ৩০০ মিগ্রা
সিমেথিকোন ইউএসপি: ৩০ মিলিগ্রাম
এন্টাসিড প্লাস কিসের ওষুধ - এন্টাসিড প্লাস কোন রোগের ওষুধ
বর্তমানে বাজারজাতকৃত এন্টাসিডগুলো ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,
অ্যালুমিনিয়াম ও সোডিয়ামের লবণ হয়ে থাকে। এন্টাসিড প্লাস হচ্ছে এক ধরনের
ঔষধ যা আমাদের পাকস্থলির অতিরিক্ত অম্লকে প্রশমন করে থাকে পাশাপাশি দেহের
সাধারণত বুকজ্বালা ও বদহজম রোধে ব্যবহৃত করা হয়। আবার কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা
ডায়রিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এর ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও
আরো পড়ুনঃ সিনামিন কোন রোগের ঔষধ জেনে নিন
- অম্বল
- গ্যাস্ট্রাইটিস
- স্ট্রেস আলসারেশন
- এটি পেপটিক আলসার
- অপারেটিভ গ্যাসের ব্যথা
- দ্রুত অ্যাসিডের ব্যথা উপশম করে
- পেপটিক এসোফ্যাগাইটিস
- গ্যাস্ট্রিক হাইপার অ্যাসিডিটি
- জিআই রক্তপাত প্রতিরোধে
- গ্যাস্ট্রিক ফেনা ছড়িয়ে দেয়
- গ্যাস ও বাতাস এর নির্গমনকে সহজ করে।
উপরোক্ত সমস্যাগুলো ছাড়াও এই ওষুধ আরো বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা
হয়। আশা করছি এন্টাসিড প্লাস কিসের ওষুধ বা এন্টাসিড প্লাস কোন রোগের ওষুধ
হিসেবে ব্যভার করা হয় তা জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, এন্টাসিড প্লাস এর কাজ কি
বা এই ওষুধ কি কাজ করে সেটা জেনে নেই।
এন্টাসিড প্লাস এর কাজ
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম জেনে নেয়ার পূর্বে প্লাস এর কাজ সম্পর্কে জেনে
নেওয়াটা জরুরি। এন্টাসিড প্লাস আমাদের শরীরের বিভিন্ন গ্যাস জাতীয় সমস্যার
সমাধানে বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে। এন্টাসিড প্লাস এ বিদ্যমান
সিমেথিকন (Simethicone) উপাদানটি থাকার ফলে আমাদের পেটে জমে থাকা
গ্যাসের বুদবুদি ভেঙে ফেলে, তাই পেটের অস্বস্তি ভাব খুব সহজেই দূর হয়ে যায়।
এন্টাসিড প্লাস হচ্ছে এমন একটি ওষুধ যা আমাদের দেহের পাকস্থলির অম্লকে
নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। এটি সাধারণত পেটে ফোলা ভাব, বুক
জ্বালাপোড়া ও বদ হজমের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। এন্টাসিড প্লাস
মূলত ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড বা অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড সমন্বয়ে
উৎপাদিত হয়।
সাধারনত এন্টাসিড প্লাসে এই উপাদান গুলো আমাদের পাকস্থলীর ph স্তরটি বৃদ্ধি
করতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে পেটের অস্বস্তি ভাব অনেকগুনেই কমে যায়। এই
ওষুধ সেবনের পরে তা আমাদের পাকস্থলীতে পৌঁছানোর পর, পাকস্থলীর অ্যাসিডে
দ্রবীভূত হবে, যার ফলে দেহের ক্যাটায়নগুলো মুক্তি পাবে এবং অতিরিক্ত
পাকস্থলীর অ্যাসিডকে নিরপেক্ষ করে তুলবে।
আশা করছি এন্টাসিড প্লাস এর কাজ বা কিভাবে কাজ করে সেটি জানতে পেরেছেন। এবার
চলুন এন্টাসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা জেনে নেই।
এন্টাসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা
এই ওষুধ মূলত অতিরিক্ত অম্লকে প্রশমন এবং বুকজ্বালা ও বদহজম রোধে বেশ উপকারি
ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া ডায়রিয়া কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য চিকিৎসাতেও
এন্টাসিড প্লাস ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বাজারজাতকৃত এন্টাসিডগুলো ক্যালসিয়াম,
অ্যালুমিনিয়াম ও সোডিয়ামের লবণ হয়ে থাকে।
এন্টাসিড হচ্ছে একটি নন-সিস্টেমিক নাশক হিসেবে কাজ করে। যা অত্যন্ত
নির্ভরযোগ্য ও দীর্ঘক্ষন কার্যকরী অম্লনাশক। অন্ত্র ও পাকস্থলীর সংবেদনশীল
পর্দাগুলোতে মিউকোসার উপর অক্সিকোন আচ্ছাদন তৈরী করে থাকে।
যার ফলে অন্ত্রকে পুনরাক্রমণ থেকে রক্ষা করে ক্ষতের নিরাময় ত্বরান্বিত করে।
এন্টাসিড একটি নির্ভরযোগ্য অম্লনাশক হওয়ার কারণে আমাদের সহজে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য
এবং ডায়রিয়া হয়না। এই ওষুধের আরও বেশ কয়েকটি উপকারিতা রয়েছে যেমন-
- বদহজম রোধ করে
- স্ট্রেস আলসারেশন রোধ করে
- এটি পেপটিক আলসার নিরাময় করে
- অপারেটিভ গ্যাসের ব্যথা নিরাময় করে
- দ্রুত অ্যাসিডের ব্যথা উপশম করে
- পেপটিক এসোফ্যাগাইটিস দূর করে
- গ্যাস্ট্রিক হাইপার অ্যাসিডিটি দূর করে
- জিআই রক্তপাত প্রতিরোধ করে
- গ্যাস্ট্রিক ফেনা ছড়িয়ে দেয়
- বুক জ্বালাপোড়া নিরাময় করে
- তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী অন্ত্রের প্রদাহ দূর করে
- পাকস্থলি এবং ডিওডেনাল আলসার দূর করে থাকে
- রিফ্লাক্সজনিত খাদ্যনালীর প্রদাহ দূর করে
- গ্যাসের ব্যথা সহ গ্যাসের উপসর্গগুলি উপশম করে।
নিম্নে আপনাদের উপকারের জন্য কিছু সাধারণ এন্টাসিড প্লাস ব্র্যান্ডের নাম
উল্লেখ করা হলো-
- এন্টাসিল (Antasyl)
- র্যানিটিডিন (Ranitidine)
- নেক্সিয়াম (Nexium)
- প্যান্টোপ্রাজোল (Pantoprazole)
- এসিডফোল (Acidofol)
তবে আপনি এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে না থাকেন, তাহলে ওষুধটি
ঠিকভাবে কাজ করবে না। তাই ভালোমতো খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে ওষুধ টি খেতে
পারেন। তাহলে চলন এবার আমরা এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই।
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম
এন্টাসিড প্লাস সেবনের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আমাদের এই এন্টাসিড
প্লাস খাওয়ার আগে অবশ্যই সেই নিয়মগুলো জানতে হবে। এই ওষুধ সাধারণত বিভিন্ন
বয়স ভেদে ও বিভিন্ন রোগের কন্ডিশন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় খাওয়া হয়। তাই
আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা নিম্নে একটি স্বাভাবিক নির্দেশনা উল্লেখ করেছি।
যদিও চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত সেবন করা মোটেও উচিত নয়।
- খাবার খাওয়ার ৩০- ৬০ মিনিট পরে ওষুধটি সেবন করুন। কারণ এটি আমাদের পেটের এসিড নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে কার্যকরী সময়।
- এই ওষুধ দিনে সর্বোচ্চ ৩ বার সেবন করা যায়। প্রতি ৪ থেকে ৬ ঘন্টা অন্তর অন্তর ওষুধটি সেবন করতে হয় তবে এর বেশি সেবন করা ঠিক না।
- আপনার পেট যদি অতিরিক্ত জ্বালাপোড়া করে, তাহলে প্রয়োজনে ২ টা এন্টাসিড প্লাস সেবন করে নিতে পারেন। এতে করে পেটের অস্বস্তি ভাব অনেক দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।
- এই ওষুধটি সেবনের পরে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কারণ ওষুধ শরীরে ভালোমতো শোষিত হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হয়।
- আপনি যদি নিয়মিত অন্যান্য রোগের ওষুধ সেবন করে থাকেন তাহলে এই ওষুধ খাওয়ার আগে কমপক্ষে ২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
- এছারাও আপনি যদি টানা ২ সপ্তাহের বেশি এন্টাসিড প্লাস খেয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে।
আর আপনানাদেরে একটি বিষয় মনে রাখা উচিত যে আমরা কিন্তু সাধারণ তথ্যের
ভিত্তিতে আপনাদের সঠিক তথ্য প্রদান করার চেষ্টা করি। আপনি যদি সঠিক ডোজ এবং
কিভাবে এন্টাসিড প্লাস খেতে হয় তা নির্ধারণ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তার
বা ফার্মাসিস্টের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। আশা করছি এ বিষয়টি অবশ্যই
সতর্কতা অবলম্বন করবেন। এবার চলুন এন্টাসিড প্লাস কখন খেতে হয় তা জেনে নেই।
এন্টাসিড ট্যাবলেট কি চুষে খেতে হয়
আমাদের মাঝে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা খাওয়ার নিয়ম ভালোমতো না জেনেই ওষুধটি
সেবন করেন। এতে এর পরিপূর্ণ কার্যকারিতা পাওয়া যায় না। তাই এন্টাসিড
প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়ে এরপরে ওষুধটি সেবন করতে
হবে। অনেকে এই ওষুধ খাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকেন যে এই ওষুধ দিলে খেতে
হয় নাকি চুষে খেতে হয়।
এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট চুষে খাওয়া উচিত না। কারণ আপনি যদি এই
ওষুধটি চুষে খান তাহলে এই ওষুধে বিদ্যমান উপাদানগুলি সম্পূর্ণভাবে শোষিত
হতে পারে না। যার এর ফলে ওষুধটির কার্যকারিতা অনেকাংশে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে।এক্ষেত্রে পেট বা বুকের জ্বালাপোড়া নিরাময়ে হতে অনেক সময় লাগতে
পারে।
তাই এই ট্যাবলেট টি চুষে না খেয়ে গিলে খাওয়াই উত্তম। আপনি ওষুধটি গিলে সেবন
করেন তাহলে ওষুধের সক্রিয় উপাদানগুলি পেটে ঠিকভাবে পৌঁছাতে কম সময় লাগে
যার ফলে গ্যাস্ট্রিক জাতীয় সমস্যা সমাধান খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই হয়ে
যায়। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এবার চলুন এন্টাসিড প্লাস কখন খেতে
হয় সেই বিষয়ে জেনে নেই।
এন্টাসিড প্লাস কখন খেতে হয়
অ্যান্টাসিড খাবার খাওয়ার আগে বা পড়ে দুইভাবেই খাওয়া যায়। এই ওষুধ ২ থেক ৪
ঘণ্টা কাজ করে থাকে। আপনি যদি বিভিন্ন মশলাদার খাবার খেয়ে থাকেন তাহলে সেই
খাবার খাওয়ার আগেও এই ওষুধ খেতে পারেন আবার খাবার খাওয়ার পরেও খেতে পারেন। তবে
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরী। আপনি যদি গ্যাস্ট্রিক বা
পেটে জ্বালাপোড়া সমস্যা লক্ষণ করেন তাহলে আপনি খাবার খাওয়ার পরে এই ওষুধ সেবন
করলে এ সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে।
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ বা সাসপেনশন খাওয়ায়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে রাতের খাবারের ১
থেকে ৩ ঘন্টা পরে ১-২ চা চামচ খেতে হয়। তবে যেসব রোগীদের হাইপোফসফেটেমিয়া
(Hypophosphatemia) আছে তাদের এটি দেয়া যাবে না। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় ও
স্তন্যদানকালে এ্যালুমিনাম হাইড্রোক্সাইড এবং ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড
ব্যবহার না করার পরামর্শ দেয়া হয়।
এন্টাসিড প্লাস এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এন্টাসিড প্লাস সাধারণত এই ওষুধটি ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড,
অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও সাইমেথিকন উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি হয়। আর
ওষুধ মূলত আমাদের গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে
থাকে। তবে এই ওষুধটি চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কিংবা অতিমাত্রায় সেবনের ফলে
এর বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এর সাধারণ কিছু পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়াগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
বমি (Vomit)
পেট ফোলা (Abdominal bloating)
বমি বমি ভাব (Nausea)
মাথাব্যথা (Headache)
ডায়রিয়া (Diarrhea)
কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) ইত্যাদি।
এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো আমরা সকলেই হয়তো শরীরের সাথে মানিয়ে নিতে পারি।
তবে এই প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে যদি কোন একটি সমস্যা আপনার দেহে দীর্ঘস্থায়ী
হয় তাহলে আপনাকে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা খুবই জরুরী।
এন্টাসিড প্লাসের গুরুতর বা জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি নিম্নে উল্লেখ করা
হলোঃ
অ্যালুমিনিয়াম বিষাক্ততা: এটি সাধারনত যাদের কিডনিজনিত রোগ রয়েছে
তাদের এই লক্ষণগুলি হতে পারে। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হাড়ের ব্যথা,
ক্লান্তি এবং দুর্বলতা।
ম্যাগনেসিয়াম বিষাক্ততা: এটিও যাদের কিডনিজনিত রোগ রয়েছে তাদের
ম্যাগনেসিয়াম বিষাক্ততা দেখা দিতে পারে। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি,
দুর্বলতা এবং মাথাব্যথা।
অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া: যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের
এই লক্ষণ গুলি দেখা দিবে। যেমন ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং শ্বাস নিতে অসুবিধা
হওয়া।
এন্টাসিড প্লাস ওষুধ খাওয়ার ফলে আপনার যদি উপরোক্ত যেকোন একটি সমস্যা জটিল
ভাবে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
এন্টাসিড প্লাস সেবন করতে হবে। আশা করছি এন্টাসিড প্লাস এর পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়াগুলো জানতে পেরেছেন। এবার চলুন এন্টাসিড প্লাস ওষুধ সেবনে
সতর্কতাগুলো জেনে নেই।
এন্টাসিড প্লাস সেবনে সতর্কতা
এন্টাসিড প্লাস ব্যবহারের আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে বিশেষ
সতর্কতার সাথে এই ওষুধগুলি সেবন করা উচিত। এই ওষুধগুলি সেবনে সতর্ক থাকা
জরুরী বিশেষ করে যদি আপনার নিম্নে দেওয়া সমস্যাগুলির থেকে থাকে।
- কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে
- অন্যান্য ঔষধ সেবন করে থাকলে
- গর্ভাবস্থায় বা স্তন্যদানকারী হলে
- বয়স যদি ৬৫ বছরের বেশি হলে ইত্যাদি।
এছাড়াও এটি কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সতর্কতার সাথে ব্যবহার
করতে হবে। তাই এন্টাসিড প্লাস ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই আপনাকে নিবন্ধিত
চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ বা নির্দেশাবলী মেনে ওষুধটি সেবন করা উচিত। আশা
করছি উপরিক্ত আলোচনার মাধ্যমে হয়তো এতক্ষণে এন্টাসিড প্লাস এর
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সর্তকতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। এবার চলুন
এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর দাম জেনে নেই।
এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর দাম
এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট পেটে জ্বালাপোড়া ও এসিডিটি সমস্যার জন্য
কার্যকরী হিসেবে পরিচিত। যেটা আমরা অনেকেই সেবন করিয়ে থাকি। এটি স্কয়ার ও
ইনসিপিয়া ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানি বাজারজাত করে থাকে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস
অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড + ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড + সিমেথিকোন
400 mg+400 mg+30 mg ১০ পিচ ট্যাবলেট এর মূল্য ৮ টাকা
800 mg + 800 mg. + 60 mg ১০ পিচ ট্যাবলেট এর মূল্য ১৬ টাকা
ইনসিপিয়া ফার্মাসিউটিক্যালস
400 mg + 400 mg + 30 mg ১০ পিচ ট্যাবলেটের দাম ৭ টাকা
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর দাম
অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড + ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড
(১৭৫ মি.গ্রা.+২২৫ মি.গ্রা.)/৫ মি.লি.
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস 200 ml এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর মূল্য প্রায়
৬৫ টাক
লেখকের শেষকথাঃ এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম
পরিশেষে যেটা বলব নিজের রোগ বা সমস্যার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে
থেকে ওষুধ সেবন করবেন না। যেকোনো ধরণের ওষুধ সেবন করার আগে প্রথমে আপনাকে
একজন নিবিন্ধিত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তারপরে তার দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী
ওষুধ সেবন করতে হবে। তাহলেই ইনশাল্লাহ ভালো ফলাফল পেয়ে যাবেন।
আমরা ইতিমধ্যে এই আর্টিকেলে এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস
এর কাজ কি এবং এন্টাসিড প্লাস নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছি। আপনারা হয়তো
এতক্ষণে এ বিষয়ে সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা পেয়ে গেছেন। আর যদি এন্টাসিড প্লাস
সম্পর্কে আপনাদের কোন ধরণের প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট সম্পর্কিত আজকের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলে
বন্ধুদের শেয়ার করে দিবেন। এতে তারাও এই ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে
পারবেন। বিভিন্ন মেডিসিন সম্পর্কিত অন্যেন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমাদের
আড্ডাভিউ আইটি ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করার অনুরোধ রইলো।
আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url