জয়তুন তেলের আসাধারন ২০টি উপকারিতা ও জয়তুন তেলের দাম

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত জয়তুন তেল ব্যবহার করতে চাচ্ছেন কিন্তু এই তেলের উপকারিতা কি বা এই তেল সঠিকভাবে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে হয়তো জানি না। তো আপনি যদি তাদের দলের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের আজকের এই পোষ্টটি আপনার জন্য অনেক উপকার হতে চলেছে। কেননা এই পোষ্টে জয়তুন তেলের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সাজানোর চেষ্টা করেছি।
জয়তুন তেলের আসাধারন ২০টি উপকারিতা ও জয়তুন তেলের দাম

প্রিয় পাঠক, যদি আপনি আমাদের পোষ্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকেন, তাহলে জয়তুন তেলের আসাধারন ২০টি উপকারিতা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি জয়তুন তেলের আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। তাই অবহেলা না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি গুরুত্ব সহকারে শেষ অবদি পড়তে থাকুন। আশা করছি, জয়তুন তেলের উপকারিতা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরে আপনাদের উপকারে আসবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা - জয়তুন তেল

যেকোনো তেল আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পরিচিত। তেল বহুল ব্যবহৃত একটি পণ্য। বিশেষত রান্না করার ক্ষেত্রে আমাদের সকলেকেই তেল ব্যবহার করতে হয়। অপরদিকে তেলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপকারি পুষ্টিগুণ যা আমাদের শরীরকে রাখে সুস্থ ও স্বাভাবিক। সকল তেলের মধ্যে জয়তুন তেলের উপকারিতা অন্যসব তেলের চেয়ে অনেক বেশি।

তাই আপনাকে এই জয়তুন তেলের ব্যবহারের আগে এর উপকারিতা, ব্যবহারের নিয়ম, জয়তুন তেল চেনার উপায়, জয়তুন তেলের দাম সহ এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নেওয়া খুবই জরুরী। তাহলে চলুন, আর কথা না বাড়িয়ে বা আপনার মূল্যবান সময়টুকু ক্ষতি না করে মূল আলোচনায় আসা যাক। আমরা প্রথমে জয়তুন তেল সম্পর্কে বা এই তেলের পরিচিতি সংক্ষেপে জেনে নিব।

জয়তুন তেল কি

জয়তুন হচ্ছে একটি আরবি শব্দ যার ইংরেজি নাম হল অলিভ অয়েল (Olive Oil)। জয়তুন ফল থেকে নিঃসৃত তেলকে আমরা অলিভ অয়েল বলে থাকি। আমরা অধিকাংশ মানুষ জয়তুন ফল আর জলপাই একই মনে করি। আসলে তা কিন্তু নয় জয়তুন ও জলপাই দুটি আলাদা প্রজাতির ফল।

জলপাই এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Elaeocarpus serratus অপরদিকে জয়তুনের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Olea europaea।  এই দুটি ফল দেখতে একই রকম মনে হলেও এদের মধ্যে স্বাদে ও গঠনে পার্থক্য রয়েছে। যাইহোক, এই জয়তুন তেল রান্নার জন্য এবং ত্বক পরিচর্যা করার ক্ষেত্রে খুবই জনপ্রিয়।

মূলত জয়তুন ফলকে ভালোভাবে প্রসেস করে পিষে তেল বের করা হয়। জয়তুন তেল আমাদের শরীরের জন্য অনেক স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর। আপনি যদি নিয়মিত জয়তুন তেল খেতে পারেন, তাহলে আপনার দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে উপকারী কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিযুক্ত করে।

এছাড়াও লিভারের সমস্যা নিরাময় করতে জয়তুন তেলের কোন জুড়ি নেই। অপরদিকে, এই তেল নিয়মিত রান্নার সাথে গ্রহন করলে শরীর এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। নিচে জয়তুন তেলের পুষ্টিগুন ও ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

জয়তুন তেলের পুষ্টিগুণ

আপনারা অনেকেই জয়তুন তেল বা অলিভ অয়েল এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এজন্য পোস্টের এই অংশে আমরা জয়তুন তেলের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তুলে ধরেছি। জয়দিন তেলের পুষ্টির উপাদান হচ্ছে-
  • ক্যালরি (১১৯ মিলিগ্রাম)
  • মোট চর্বি (১৪ গ্রাম)
  • ভিটামিন ই (১.৯ মিলিগ্রাম)
  • ভিটামিন কে (৮.১ মাইক্রোগ্রাম)
  • স্যাচুরেটেড চর্বি (২ গ্রাম)
  • মনোস্যাচুরেটেড চর্বি (১০ গ্রাম)
  • পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি (১.৫ গ্রাম) ইত্যাদি।

জয়তুন তেলের ২০টি উপকারিতা

সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য: জয়তুন তেলে রয়েছে উপকারী পলিফেনাল উপাদান যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।  এই জন্য এই তেল ব্যবহার করার ফলে মানসিক চাপ থেকে আমাদেরকে দূরে রাখে এবং মস্তিষ্ক স্বাভাবিক ও সুস্থ রাখে। তাছাড়াও এই তেল ব্যবহারে আমাদের স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায়।

হাড় মজবুত করে: বয়স দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয় যেমন হাড়ের সমস্যা। মূলত হাড়ের সমস্যা দূর করার জন্য এই জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি এই তেল নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার দেহের হাড় মজবুত হওয়ার পাশাপাশি শক্তিশালী ও সুস্থ থাকবে।

চোখের ক্লান্তির দূর করে: আমরা দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা মোবাইলে তাকিয়ে থেকে কাজ করলে অনেক সময় ক্লান্তিক অনুভব হয় সেক্ষেত্রে জয়তুন তেল চোখের জলের পাশে ভালোভাবে মেস্যাজ করে নিলে সেই ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও চোখের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি শরীর কেউ সতেজ রাখবে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি: দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কারণে আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। নিয়মিত জয়তুন তেল ব্যবহার করলে দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে চোখের চারপাশে এই তেল ভালোভাবে নিয়মিত মালিশ করতে হবে।

ডায়াবেটিসে উপকারী: জয়তুন তেল ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তাদের জন্যেও অনেক উপকারী। কেননা এই জয়তুন তেল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি একজন ডায়াবেটিস রোগী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ডায়েটে খাবারের তালিকায় জয়তুন তেল অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধে: জয়তুন তেল ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। কেননা এই তেলে বিদ্যমান উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি হতে বাধা দেয়। আপনি যদি নিয়মিত জয়তুন তেল খেতে পারেন, তাহলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

চর্মরোগে রোগের উপকারী: সাধারনত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই তেল ব্যবহার করে থাকেন। কেননা এই তেল ব্যবহারে চর্ম রোগের বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়। তাই এই তেল চর্ম রোগের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকরী হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ করে: জয়তুন এর সাথে আমাদের দেহের পিত্তথলির সাদৃশ্য এবং এর রসের সাথে পিত্তরসের একটি কমন মিল রয়েছে। এটি দেহের পিত্তথলির পাথর হওয়া থেকে রক্ষা করে। আবার এই তেল নিয়মিত খেলে অনেক সম দেখা যায় পিত্তথলির পাথর অপসারণ হয়ে যায়।

পেটের সমস্যা দূর করে: জয়তুন তেল খাবার হিসেবে রান্না করে খেলে পেটের নানান ধরণের সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। কেননা এই তেলে রেচক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে যা খাদ্য হজম করতে সহায়তা করে।

আলসার বা গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধী: এছাড়াও এই তেলে উপকারি উপাদান থাকার ফলে আপনি যদি নিয়মিত জয়তুন তেল ক্ষান তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও দূর হয়ে যাবে।

ত্বক কোমল ও নরম থাকে: এই তেল শরীরে ভালোভাবে মালিশ করলে ত্বকের নানান ধরণের উপকার পাওয়া যায়। যেমন নিয়মিত এই তেল মালিশ করলে শরীরের ত্বক নরম এবং কোমল করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন দাগ ও বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

শরীরের জ্বালাপোড়া দূর করে: জয়তুন তেল অত্যাধিক পুষ্টিগুণ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ ভরপুর। এই তেলে সবচেয়ে মূল্যবান ধাতু সোনার গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যা আমাদের দেহের জ্বালাপোড়ার ভাব থাকলে তা কমাতে সহায়তা করে।

বার্ধক্যের ছাপে বাধা দেয়: এখন আমাদের ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে বয়স বৃদ্ধির প্রয়োজন পড়ে না। মানসিক চাপ, অস্বাভাবিক জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে অনেকের অল্প বয়সেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যাচ্ছে। এই তেল নিয়মিত খেলে অল্প বয়সে ত্বকের বার্ধকের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করবে। কেননা এই তেলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি সমৃদ্ধ উপাদা রয়েছে।

চুলের যত্নে: চুলের যত্ন এই তেলের রয়েছে উপকারিতার সমাহার। এই তেল নিয়মিত মাথায় ভালোভাবে ম্যাসাজ  করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।

মাতৃত্বজনিত দাগ থেকে রক্ষা করে: গর্ভকালীন সময়ে মহিলাদের নানান প্রকারের মাতৃত্বজনিত দাগ সৃষ্টি হয়। জয়তুন তেল পেটে নিয়মিত ব্যবহারে এই অবাঞ্চিত দাগ দূর হয়ে যায়। এছাড়াও এই তেল নিয়মিত ব্যবহারে অন্যান্য দাগ-ও দূর হয়ে যায়।

ত্বকের শুষ্কতা দূর করে: অনেকেরই প্রতিনিয়ত ত্বকে শুষ্কতা দেখা দেয়। বিশেষ করে শীতকালীন সময়ে এই সমস্যাটা বেশি হতে দেখা যায়। আপনি যদি জয়তুন তেল এ সময় নিয়মিত ব্যবহার করেন, তাহলে ত্বকের শুষ্কতা দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকের মলিণতা তো বৃদ্ধি পাবে।

রক্তস্বল্পতা দূর করে: আপনারা জানলে অবাক হবে এই তেলে রক্তশূন্যতা দূর করার ক্ষমতা রয়েছে। বিশেষ করে মেয়েদের এই সমস্যাটা বেশি লক্ষ্য করা হয়। আপনি যদি এই তেল নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে রক্তস্বল্পতা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে। আবার দেহে রক্তের পরিমাণ যদি খুবই কম হয় বা কেউ রক্তস্বল্পতাই ভোগেন সেক্ষেত্রে স্বল্পতা দূর করা অতীব প্রয়োজন। তাই এ সমস্যাই জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: জয়তুনের তেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  রয়েছে যা আমাদের দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশিফাই প্রেসার কমিয়ে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: এই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই লক্ষ্য করা হয়। দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যাভ্যাসের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। এই তেল কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় খুবই উপকারী। এই তেল খাওয়ার ফলে দেহের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায়।

অতিরিক্ত ওজন কমাতে: জয়তুন তেল ওজন কমাতে ভূমিকা পালন করে থাকে। জয়তুন তেল রান্না করে খাবারের সাথে খেলে দেহে চর্বি জমতে বাধা দেয় যার ফলে ওজন ধীরে ধীরে কমে যায়। যারা ডায়েট করছেন তারা নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করুন তাহলে দেখবেন আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়ার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখবে।

জয়তুন তেলের অপকারিতা

সবকিছুরই উপকারিতা থাকার পাশাপাশি অপকারিতাও থাকে। জয়তুন তেল অবশ্যই তার বিপরীত নয়। জয়তুন তেলের অপকারিতাগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হল-
  • আপনার যদি ত্বক তৈলাক্ত হয়, তাহলে এই তেল ব্যবহারে ব্রণ হতে পারে।
  • ত্বক অত্যন্ত শুষ্ক হলে জয়তুন তেল ব্যবহারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
  • এই তেল পরিমাণে বেশি ব্যবহার করলে রক্তে শর্করার মাত্রার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা অত্যাধিক ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। 
গর্ভবতী বা স্তনদানকারী মহিলাদের এই তেল খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। কেননা এই তেল অতিমাত্রায় খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। আশা করছি জয়তুন তেলের অপকারিতাগুলো জানতে পেরেছেন। এবার চলুন জয়তুন তেল ব্যবহারের নিয়ম জেনে নেই।

জয়তুন তেল ব্যবহারের নিয়ম

আপনারা হয়তো ইতিমধ্যে জেনে নিয়েছেন যে জয়তুন তেলের উপকারিতা অনেক বেশি। তবে জয়তুন তেলে উপকারিতা থাকলেও আপনি যদি সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করেন তাহলে সেই উপকারগুলো কার্যকর হবে না। এজন্য জয়তুন তেল ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানতে হবে। জয়তুন তেল ব্যবহারের সহজ উপায় হচ্ছেঃ
বিভিন্ন রান্নায় জয়তুন তেল ব্যবহার করে খেতে পারেন। এই তেলের রান্না করে খেলে আমাদের শরীর সুস্থ এবং সতেজ থাকবে। আপনি বিভিন্ন সালাদে এই জয়তুন তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। কেননা এই তেলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

আপনার ত্বক, চুল বা শরীরের অন্যেন্য স্থানে ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই তেল ভালোমতো ম্যাসাজ করে ব্যবহার করতে হবে। তাহলে আপনার চুল ধীরে ধীরে ঘন ও লম্বা হতে থাকবে। এছাড়াও জয়তুন তেল রুটির সাথেও খাওয়া যায়। আপনি চাইলে রুটির বানানোর সময় এই তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

ফেসপ্যাক ও হেয়ার প্যাক হিসেবেও জয়তুন তেল ব্যবহার করা যায়। ত্বকের যত্নে এই তেলের গুনাগুণ সবচেয়ে বেশি। এটি নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করতে পারলে ত্বক নরম এবং কোমল হয়। এক্ষেত্রে দুই হাতে তালুতে তেল নিয়ে শরীরে ম্যাসাজ করতে হবে।

চুলের যত্নে জয়তুন তেলের উপকারিতা

জয়তুন তেল চুলের যত্নে খুবই উপকারী। এটি ব্যবহারে চুলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায়। চুলের কেমন উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিচে উল্লখে করা হলো- 
  • মাথার ত্বক সুস্থ থাকে
  • চুলের খুশকি দূর হয়ে যায়
  • চুলকে সিল্কি, নরম এবং মসৃণ করে
  • চুল ঝলমলে এবং উজ্জ্বল দেখাবে।
  • মাথার চুল পড়া কমে এবং পুনরায় চুল গজাতে সাহায্য করে
  • চুল অল্প সময়ে বহুগুণে বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি।

জয়তুন তেলের দাম

জয়তুন তেলের দাম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে আমরা আমাদের বাংলাদেশে এই তেলের দাম কত সেটা উল্লেখ করা হলো- 
  • ১ লিটার কাঁচের বোতলের দাম ১২৫০ - ৩০০ টাকা
  • ৫০০ গ্রাম কাঁচের বোতলের দাম ৭০০ - ৭৫০ টাকা
  • ২৫০ গ্রাম বোতলের দাম ৩৭৫ - ৪০০ টাকা
  • ১০০ গ্রাম কাঁচের বোতলের দাম  ১৫০ - ২০০ টাকা
আশা করি জয়তুন তেলের দাম কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। তবে স্থানভেদে, গুণগত মান এব চাহিদার দিক দিয়ে দামে কমবেশি হতে পারে। আসলে এই তেলের উপকারিতার কাছে দাম তেমন ম্যটার করে না। তবে এই তেল কেনার ক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে কেননা আপনি যদি আসল তেল না কিনে নকল তেল কিনে ব্যবহার করেন তাহলে এর উপকারিতা লক্ষ্য করতে পারবেন না।

এজন্য এর গুণগত মান ভালোমত যাচাই করে কিনতে হবে। কেননা কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা  বিভিন্ন ধরনের ভেজাল বা নকল তেল বিক্রি করছে। তবে আমি আপনাকে এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারি। চলুন তাহলে আমরা নিচের অংশ থেকে আসল জয়তুন তেল চেনার উপায় জেনে নেই।

জয়তুন তেল চেনার উপায় - অরিজিনাল জয়তুন তেল

আসল জয়তুন তেল চেনার প্রধান উপায়টি হচ্ছে তেলের ঘনত্ব দেখা। আর তেলের ঘনত্ব দেখতে হলে আপনাকে তেলটি অধিক ঠান্ডাস্থানে রেখে দিতে হবে। মনে রাখবেন আসল জয়তুন তেল ফ্রিজে রাখলে সম্পূর্ণভাবে জমে যায় না বরং এর ঘনত্ব বেড়ে যায়। যদি ফ্রিজে রাখার পর খেয়াল করেন যে তেলটি  জমে গেছে বা তেলের ঘনত্ব এর কোন পরিবর্তন হয়নি তাহলে বুঝবেন তেলটি নকল।

জয়তুন তেল চেনার আরেকটি উপায় হচ্ছে এই তেলের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি বিক্রি করার জন্য নকল তেল কম দামে বিক্রি করে থাকে। কিন্তু মনে রাখবেন আসল তেলের দাম অনেক বেশি হয়। কেউ যদি অনেক কম দামে তেল বিক্রি করেন তাহলে বুঝতে হবে তেলটি নকল।

আরো একটি চেনার উপায় হল তেলের বোতল দেখে। আসল তেল সবসময় মোটা কাঁচের বোতলে বিক্রি হয়ে থাকে। এই তেল টিন বা প্লাস্টিকের বোতলে বোতলজাত করা হয় না। আশা করছি উল্লিখিত বিষয়গুলো মাথায় রেখে বাজারে জয়তুন তেল ক্রয় করবেন।

জয়তুন তেল কোথায় পাওয়া যায়

জয়তুন তেলের উপকারিতা, পুষ্টিগুন, এই তেল ব্যবহারের নিয়ম তো জেনে নিলাম কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে জয়তুন তেল কোথায় পাওয়া যায়? উত্তর খুবই সহজ। জয়তুন তেল হচ্ছে বহুল প্রচলিত একটি তেল। এজন্য এই তেলের খোঁজ পেতে খুব বেশি হয়রান হতে হয় না। আপনি আপনার নিকটস্থ যেকোন সুপারশপ থেকে এই তেল সংগ্রহ করতে পারবেন।

তবে এখন বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মেও জয়তুন তেল পাওয়া যাচ্ছে আপনারা চাইলে আপনার বিশ্বাস অনলাইন প্লাটফর্ম থেকেও এই তেলটি সংগ্রহ করতে পারবেন। এই তেলের দাম সম্পর্কে আশা করছি ধারণা পেয়ে গেছেন সুতরাং অনলাইন প্লাটফর্মে তেল কেনার সময় দাম নিয়ে কোন বিভ্রান্তিতে না পড়ারই কথা। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

লেখকের শেষকথাঃ জয়তুন তেলের উপকারিতা

আমরা ইতিমধ্যে জয়তুন তেলের আসাধারন ২০টি উপকারিতা ও জয়তুন তেলের দামসহ এই তেল সম্পর্কে আরও প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনারা এ বিষয়ে অবগত হতে পেরেছেন। জয়তুন তেল ব্যবহার করে উপকার পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই আসল তেল ও সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে।

আশা করছি এই তেল নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকার কথা না। তারপরও যদি এই সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত অথবা কোন অংশ বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের পোষ্টের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। জয়তুন তেলের উপকারিতা সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url