কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ | এর লক্ষণ, কেন হয় ও ঘরোয়া উপায়
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করব। তো আপনি কি প্রতিনিয়ত কোষ্ঠকাঠিন্যতায় ভুগছেন? তাহলে এই সমস্যা থেকে রেহায় পাওয়ার উপায় জানতে একেবারে সঠিক স্থানেই এসেছেন। কেননা আজকের আর্টিকেলে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় নিয়ে যাবতীয় প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছি।
আমরা হয়তো অনেকেই প্রতিনিয়ত কোষ্ঠকাঠিন্যতার সমস্যায় ভুগি কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য এর লক্ষণ কি, কেন হয়, কোন ওষুধ বা সিরাপ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় সেই বিষয়ে অবগত নয়। কোষ্ঠকাঠিন্যতার সমস্যা দেখা দেয় নাই এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। তাই আমরা আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে এই পোস্টে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ ও ট্যাবলেট এর নামসহ আরও তথ্য সাজানোর চেষ্টা করেছি।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
ভূমিকা
কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা/ শক্ত পায়খানা বর্তমান একটি সাধারন ও খুবই সুপরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা। চিকিৎসা ভাষায় মূলত পায়খানা শক্ত বা কষা হওয়াকেই কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। সাধারনত শরিরে পানির ঘাটতি থাকলে বা অতিরিক্ত গ্যাসটিকের সমস্যা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পাইলস, ফিসার, কোলন সহ পায়ুপথের বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়।
মেডিক্যালের ভাষায় কোষ্ঠকাঠিন্যকে কনস্টিপেশন বলা হয়। পরিপাকতন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা, অন্ত্রের গতিশীলতা মন্থর হওয়ার জন্য হজমকৃত খাদ্যের পুষ্টি শোষণের সময় কিছুটা পানি অন্ত্র দ্বারা শোষিত হয়, যার ফলে মল শুষ্ক বা শক্ত হয়ে যায়। মল বা পায়খানা শক্ত হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়।
পায়খানা কষা কেন হয় এই সম্পর্কে আশা করি আপনাদের একটি সঠিক ধারনা হয়েছে। এখন আসুন কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার কারণসমূহ
আমরা অনেকেই ধারণা করি কোষ্ঠকাঠিন্য স্বাভাবিকভাবেই হয়ে থাকে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তা নয়, কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার জন্য কয়েকটি সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। বিশেষ করে খাদ্য অভাস কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার জন্য মূল দ্বায়ী। তাহলে আসুন আর দেরি না করে এর কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- আঁশযুক্ত খাবার বা ফাইবার না খাওয়াঃ ফাইবার হলো শর্করার একটি জটিল রূপভেদ। ফাইবার নিজে হজম হয় না কিন্তু খাদ্য দ্রব্য বা খাবারকে হজম করতে সহায়তা করে এবং অন্ত্রে পানি ধরে রাখতে পারে। যার ফলে পায়খানা নরম হয় এবং অন্ত্রে মলের গতি বৃদ্ধি পায়। এতে মলত্যাগ সহজ হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। খাদ্যাভাসে আঁশযুক্ত খাবার বা ফাইবার না থাকায়, আবার থাকলেও পরিমানে কম, অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়াার এবং মাছ-মাংস জাতীয় খাবার পরিমানের অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য বর্তমানে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা অতিরিক্ত দেখা দিচ্ছে।
আরো পরুনঃ ব্রয়লার মুরগির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো জানুন
- অতিরিক্ত দুগ্ধ জাত খাবার খাওয়াঃ দুধ ও দুধ থেকে উৎপাদিত খাবারসমূহই দুগ্ধজাত খাবার যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে পরিপাক তন্ত্রে পরিপাকে সমস্যা হয়। দুগ্ধজাত খাবারে (যেমন, দুধ, পনির, আইসক্রিম, মাখন) বিদ্যমান ল্যকটোজ(দুধের চিনি) অন্ত্রের স্বাভাবিক কর্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। ফলে খাদ্য হজমে সমস্যা হয় এবং কোষ্ঠকঠিন্য বা কষা পায়খানা হতে পারে।
- পর্যাপ্ত পানি পান না করাঃ সুস্থতার জন্য পানি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । পানি মানবদেহের বিভিন্ন জৈবিক প্রদাহ সম্পূন্ন করে থাকে এবং বিশেষ করে অন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। পানি অন্ত্রের মলকে শোষিত হতে দেয় না। আবার শরিরের হাইড্রেশন বজায় রাখে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে, জৈবিক ক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে শরিরের বিভিন্ন অংশ থেকে পানি শোষন করে। অন্ত্রে পানির ঘাটতি হলে অন্ত্রের সঞ্চালন ধীর গতির হয়ে পরে ও মল শক্ত হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে কোনো ধরণের ঔষধ ছাড়াই সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপায়েই এই সমস্যা নিবারণ করা সম্ভব।
অনেকেই এই কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কে গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাকে এই কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কে এমন তথ্য প্রদান করব যেগুলো জেনে আপনারা উপকৃত হতে পারবেন। তাহলে চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক। আমরা প্রথমে কোষ্ঠকাঠিন্য লক্ষণগুলো কি কি সেই সম্পর্কে জেনে নিব।
কোষ্ঠকাঠিন্য লক্ষণ
কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সাধারনত অনেক গুলো লক্ষণ রয়েছে । তার মধ্যে উন্যতম কারণ গুলো হলো কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পায়খানা শক্ত হয়, অনেকে মলত্যাগের সময় ব্যথা অনুভব করেন। কারও কারও ক্ষেত্রে একটানা তিন–চারদিন পায়খানা নাও হতে পারে। এগুলো সবই সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ।
এ ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য আরো কিছু লক্ষণ রয়েছে তবে সাধারণত উপরোক্ত কারণ গুলোই লক্ষ্য করা যায় আশা করি আপনারা কোষ্ঠকাঠিন্য হবার লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ এর নাম
অনেকেই আমরা জানতে চেয়ে থাকি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম। তাই চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার ভালো সিরাপ এর নাম। এখন যেই সিরাপ নিয়ে আলোচনা করব সেই সিরাপ নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আপনারা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।
পাপায়া ২৭৫মিগ্রা/৫মিলি সিরাপ,
পাপায়া সিরাপ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সাথে সাথে খাবারের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, যকৃত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে, এবং ব্রণ দূর করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সুন্দর ও সুস্থতা নিশ্চিত এছাড়াও এর আরো অনেক উপকারিত রয়েছে।
সেবন বিধিঃ
- ১ থেকে ৫ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রেঃ ১ চা চামচ করে দিনে ৩ বার ৫ দিন পর্যন্ত / চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
আরো পরুনঃ ২ টাকায় ৫০ এসএমএস কোড এবং বিভিন্ন সিমের এসএমএস প্যাকেজ
- ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রেঃ ২ চা চামচ দিনে করে ৩ বার ৫ দিন পর্যন্ত / চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
- ১৮ বছর বয়সের উপরে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেঃ ৩ চা চামচ করে দিনে ৩ বার ৫ দিন পর্যন্ত / চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
আপনারা উপরোক্ত নিয়ম গুলো মেনে পাপায়া ২৭৫মিগ্রা/৫মিলি সিরাপ, সেবন করে দেখতে পারেন। তাহলে আশা করি আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এবং খাবারের রুচি জাতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে এবং আপনার পেট সুস্থ থাকবে আর যদি আপনার পেট সুস্থ থাকে তাহলে আপনার পুরো শরীর এমনিতেই সুস্থ থাকবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়
বর্তমান সময়ের কোষ্ঠকাঠিন্য কোন বিশেষ বিষয় নয়। এটি ছড়িয়ে পড়েছে অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই। কিন্তু তাই বলে আপনি চুপ করে বসে থাকবেন তা কিন্তু নয়। দুনিয়াতে যতগুলো সমস্যা রয়েছে তার কোনো না কোনো সমাধান ও রয়েছে। তো এই ধাপে আমরা আপনাদের সামনে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি এই তথ্যগুলো পেয়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
- আশ জাতীয় খাবার, আশ জাতীয় খাবার ঠিকমতো খেলে আপনার পাকস্থলী পরিষ্কার থাকে এবং খাবার দ্রুত হজম হয় যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- পর্যাপ্ত পরিমাণের থেকেও বেশি পানি পান করা, পানি পান করার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। অতিরিক্ত হারে পানি পান করলে শুধু মলি নরম হয় না। এর সাথে সাথে পাকস্থলীর যাবতীয় কার্যকলাপ সুস্থভাবে সম্পাদন হয়। এর কারনে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ইসবগুলের ভুষি নিয়মিত খাওয়া, নিয়মিত ইসবগুলের ভুষিতে ভিজিয়ে রাখা পানি পান করলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং পেটের যাবতীয় রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যেমন গ্যাস্ট্রিক, পায়খানার সমস্যা, ক্ষুধা না লাগা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। তো প্রতিদিন রাতে ইসবগুলের ভুসি পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন খালি পেটে খেয়ে নিতে হবে।
আশা করি আপনারা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এই টিপস গুলো যদি আপনারা ফলো করেন প্রতিনিয়তই তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের গ্যাস্টিক জনিত সমস্ত সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তো আপনারা সকলে চেষ্টা করবেন এই নিয়মগুলো মেনে চলার। আরো উপরোক্ত কাজগুলো সঠিকভাবে করার ।
লেখকের শেষকথাঃ
এতক্ষণ আমরা আপনাদেরকে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ | এর লক্ষণ, কেন হয় ও ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে জানিয়েছি। এই আর্টিকেলটি যারা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ এর লক্ষণ, কেন হয় ও ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানেনা তাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
আপনাদের যদি কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে থাকে এবং এ থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ | এর লক্ষণ, কেন হয় ও ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
আরো পরুনঃ সুপ্রাভিট জি এর উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানুন
আশাকরি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। যদি উপকৃত হয়ে থাকেন এবং এরকম আরো সুন্দর সুন্দর এবং কার্যকর সাস্থ টিপস পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট আড্ডা ভিউ আইটি এর সাথেই থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন। আল্লাহাফেজ !
আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url