ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ- ঠান্ডা লাগালে করণীয় ও বাঁচার উপায়

খুব তাড়াতাড়ি শীতকাল আমাদের মধ্যে আগমন করতে চলেছে । আর তার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যাবে আমাদের প্রতিনিয়তই ঠান্ডা লাগার সমস্যা । আর আপনারা অনেকেই জানেন না যে কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । 

তো এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ- ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার করণীয় ও বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। তো চলুন দেরি না করে ধপে ধাপে উক্ত সমস্যা গুলো থেকে বাঁচার উপায় জেনে নেওয়া যাক।

আলোচ্য বিষয় সুচিপত্র: 

সাধারনত পৌস ও মাঘ এই দুই মাস কে শীত কাল বলা হয়। আমাদের মাঝে আর অল্প কিছু দিনের মধ্যে শীত আগমন করতে চলেছে । এ সময় সাধারনত তাপমাত্রা কম থাকে ও ঠান্ডা বাতাস বয় যার কারণে এ সময় ঠান্ডজনিত বিভিন্ন সমস্যা লেগেই থাকে । বিশেষ করে বাচ্চাদের আরো বেশি ঠান্ডা  লাগার সমস্যা দেখা যায় । 
এই সকল সমস্যা আমাদের দৈনন্দিন অনেক সমস্যার মধ্যে ফেলে দেই । তো এই সমস্যাগুলো থেকে বাচার উপাই কী ? যেকোনো সমস্যারই কোন কোন সমাধান রয়েছে তো এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহোকারে পরলে আপনারা ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ- ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার করণীয় ও বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন ।

ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ

বিভিন্ন কারনে আমাদের ঘন ঘন ঠান্ডা লাগতে পারে । তার মধ্যে উন্যতম হচ্ছে আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তন হওয়া, তাপমাত্রা উঠানামা,বৃষ্টি তে ভিজা ইত্যাদি। তো চলুন নিচে এ বিষয গুলো সম্পর্কে বিস্তরিত আলাচনা করা যাক
  •  নোংরা পরিবেশ, নোংরা পরিবেশে বসবাস করলে ঠান্ডা লাগার প্রবনতা আরো বেশি হয় । কারন নাকের ভিতর বিভিন্ন ভাবে ময়লা এবং বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস, ব্যকটেরিয়া প্রবেশ করে যার কারনে আমাদের সর্দি কাসির সমস্যা দেখা দেয়।
  • অতিরিক্ত চিন্তা করা , অতিরিক্ত চিন্তা করলে মাথা ভার হয়ে থাকে এবং মাথা বেথা জ্বর ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় ।
  • ভিটামিন ডি এর অভাব, ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলে শরীরের ক্লান্তি ভাব অনেকাংশে বেরে যায়। যার কারনে অনেক সময় জ্বর, মাথা বেথা সর্দি ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  • পশু পাখির লুম, আমাদের যদি ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার সমস্যা থাকে তাহলে আমাদের পশু পাখির লুম এর আসেপাসে যাওয়া  যাবে না তাতে করে আমাদের সমস্যা বেরে যেতে পারে ।
  • গোসলের অনিয়ম, সঠিক সময়ে গোসল না করার কারোনেও ‍এ সমস্যা হতে পারে । নিয়মিত গোসল না করলেও সর্দি হতে পারে ।
এ ছারাও নাকের হাড্ডি বাকা, নাকের এলার্জি, নাকের ইনফেকশন থেকেও ঠান্ডা লাগার সমস্যা হতে পারে।

বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার কারন 

বড়দের তুলনাই বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার প্রবনতা একটু বেশিই দেখা যায় । বাচ্চাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের তুলনাই অনেক কম থাকে যার কারনে বাচ্চাদের অল্পতেই ঠান্ডা লেগে যায় । তো চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার কারন ও কী কী কারনে সাধারনত বাচ্চাদের ঠান্ডা লেগে থাকে।
  • ভাইরাস, প্রাই ২০০ টি ভাইরাস রয়েছে যেগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি ভাইরাস বচ্চাকে আক্রমন করলে বাচ্চার সর্দি, কাসি, জ্বর ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।তবে রাইনো ভাইরাস এর মধ্যে অন্যতম।
  • ধুলোবালি, বাচ্চারা অনেক সময়ই ধুলোবালি নিয়ে খেলা ধুলা করে থাকে যার কারনে তাদের নাকের মধে নিশ্বাসের সঙ্গে ধুলাবালুর প্রবেশ ঘটে যার কারনে তাদের ঠন্ডা লাগার সমস্যা বেশি হয়।
  • ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়া,  বাচ্চাদের খাবার অবশ্যয় দেখেসুনে খাওয়াতে হবে বাচ্চাদের শরীর খারাপ থাকলে লাউ, তরমুজ, শসা, ইত্যাদি ঠান্ডা জাতীয় খাবার ভাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • সময়মত গোসল করানো, বাচ্চাদের গোসল করাতে অনিয়ম হলে তাদের ঠান্ডা লাগতে পারে ।
আরো নানান কারনে বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগতে পারে ।

ঘন ঘন ঠান্ডা লাগলে করণীয়

ঠান্ডা লাগার সমস্যা আমাদের সবারই কম বেশি হয়ে থাকে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এ সমস্যা যদি অতিরিক্ত হারে বেড়ে যায় বা ঘন ঘন হতে থাকে তাহলে অবশ্যই এর কোন ব্যবস্থা করতে হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি উপায়ে ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। 

  • তুলসী পাতা, বহু গুণের অধিকারী তুলসী পাতা। তুলসী  পাতার পানি পান করলে খুব তারাতারি ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি পাবেন । এটি দারুন কাজ করে। 
  • কামরাঙ্গা, সর্দি কাসি থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা চিন্তা করতেই আমাদের সবার আগে মাথায় আসে কামরাঙ্গার কথা। কামরাঙ্গা টক জাতীয় একটি ফল যা আমাদের সর্দি কাশি দূর করতে সহায়তা করি। আপনি  নিয়মিত কামরাঙ্গা রস  খেতে পারেন। 
  • রসুন ও গরম তেল, তেলের মধ্যে কিছুটা রসুন দিয়ে গরম করে গলা এবং পুরো শরীর লাগিয়ে নিন এতে আপনি সর্দি কাশি  থেকে অনেকটা উপকার পাবেন। 
  • ঘুম, সর্দি কাশি হলে অবশ্যই নিয়ম করে ঘুমাতে হবে এ সময় শরীর দুর্বল থাকে যা ঘুমের মাধ্যমে আস্তে  আস্তে  ভালো হয়ে ওঠে । 
  • সঠিক মাত্রায় পানি পান করা, সঠিক মাত্রায় পানি পান করলে শরীরের পানি শূন্যতা কেটে ওঠে এবং তাড়াতাড়ি সর্দি কাশি থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। 

এই টিপস গুলো আপনারা ফলো করলে অবশ্যই খুব তাড়াতাড়ি ঘনঘন ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচতে পারবেন।

বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে বাঁচার উপায়

বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা যেন খুবই সাধারন একটি সমস্যাই পরিণত হয়েছে । তবে কি নেই তার কোন সমাধান ? অবশ্যই আছে । তাহলে কি সেই সমাধান ? কি করলে বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে বাচাতে পারবেন ? তো চলুন জেনে নেওয়া যাক উক্ত প্রশ্ন গুলোর উত্তর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

  • শুকনো পরিবেশে থাকা, সর্দি কাশি হলে যদি আমরা শুকনো পরিবেশে থাকলে আমাদের শরিরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় । এবং সর্দি-কাশি থেকে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
  • আনারস, আনারস সর্দি- কাশি জ্বর এর বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে । তাই আপনারা আপনার বাচ্চাদের অসুস্থতার সময় আনারস খাওয়াতে পারেন ।
  • ডাক্তারের পরামর্শ, আপনার বাচ্চার যদি জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে উঠে যায় তাহলে অবশ্যয় আপনার নিকটবর্তী ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।
  • অ্যাডিনো, অ্যাডিনো হলো একটি ভাইরাস এর নাম । অ্যাডিনো ভাইরাস যদি আপনার বাচ্চাকে আক্রমন করে তাহলে আপনার বাচ্চার অসুখ সারাতে অনেক সময় লেগে যাবে । অনেক দিন পর্যন্ত আপনার বাচ্চার কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে ।এ অবস্থাই আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • রসুন ও তেল, কয়েক টুকরো রসুন তেলের মধ্যে দিয়ে গরম করে বাচ্চার গলা এবং বুক সাহ পুরো শরীর ভালোভাবে মালিশ করুন। রসুন এবং গরম তেল বাচ্চা সর্দি কাশি জনিত রোগ থেকে তাড়াতাড়ি শেড়ে উঠতে সাহায্য করবে। আপনার অবশ্যই আপনার বাচ্চাকে এই কাজটি করবেন। 
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আপনার বাচ্চাকে অবশ্যই আপনি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখবেন নোংরা আবর্জনা  থেকে অনেক রোগ জীবাণু ছড়ায় যার ফলে বাচ্চার সর্দি কাশি হতে পারে। তাই আপনারা আপনার বাচ্চাকে সুন্দর এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখবেন।
  • ফ্রিজের খাবার, আপনারা সকলে জানেন যে ফ্রিজের খাবার অনেক ঠান্ডা। যার কারণে ফ্রিজের খাবার আপনার বাচ্চাকে খাওয়ালে অবশ্যই আপনার বাচ্চার ঠান্ডা লেগে যাবে। তাই আপনারা সকলেই ফ্রিজের খাবার আপনার বাচ্চাকে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকবেন।
এই টিপস গুলো ফলো করলে অবশ্যই আপনার বাচ্চা সর্দি কাশি জনিত ঘনঘন ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি পাবেন। আপনারা অবশ্যই চেষ্টা করবেন আপনার বাচ্চাকে এই কাজ গুলো থেকে বিরত রাখার । তাহলে আপনার বাচ্চার সুস্থতা নিশ্চিত করতে আপনার খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না।

 উপসংহার 

এতক্ষণ আমরা আপনাদেরকে ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানিয়েছি। এই আর্টিকেলটি যাদের ঘনঘন ঠান্ডা লাগে এবং ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচার উপায়  সম্পর্কে জানেনা তাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

আপনাদের যদি ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা সমস্যা থেকে থাকে   এবং এ থেকে বাচার উপায়  সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আপনাদের ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা এবং ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। 

আশাকরি এই আর্টিকেলটি  পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। যদি উপকৃত হয়ে থাকেন এবং এরকম আরো সুন্দর সুন্দর এবং কার্যকর টিপস পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট আড্ডা ভিউ আইটি এর সাথেই থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন। আল্লাহাফেজ !

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url